চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় মাদকের আস্তানা ‘মামা-ভাগিনার দোকান’ থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এহতেশাহমুল হককে পুলিশ আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে! এ সময় তাঁর কাছে ইয়াবাও পাওয়া যায়। তবে পুলিশ তাঁকে আটকের বিষয়েটি অস্বীকার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে মাদকের ডেরা মামা-ভাগিনার দোকানে ঝটিকা অভিযান চালায় একদল পুলিশ। এ সময় সেখানে ছাত্রলীগ নেতা এহতেশাম অবস্থান করছিলেন। পরে তাঁকে পুলিশ সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে থানায় নিয়ে যায়। বিষয়টি পুরো এলাকার মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন পেকুয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান। তিনি প্রথমে বলেন, ‘মাদকের আস্তানা মামা-ভাগিনার দোকানে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পুলিশ যায়। তবে সেখান থেকে কাউকে আটক বা কোনো মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেনি পুলিশ।’
পরে এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘সেখানে পুলিশ যায়নি। তবে অন্য কোনো সংস্থাও অভিযান চালাতে পারে। এ বিষয়ে আমি কোনো কিছুই অবগত নই।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেকুয়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য বলেন, ছাত্রলীগ নেতা এহতেশামকে মাদকের আস্তানা থেকে আটক করার ঘটনা সত্য। এমনকি তাঁর কাছ থেকে কিছু ইয়াবাও জব্দ করা হয়। এ অবস্থায় তাঁকে টানা-হেচড়া করে অটোরিকশায় তুলে থানায় নিয়ে আসা হয়। এতে তার পরনের কাপড়-চোপড়ও ছিঁড়ে যায়। কিন্তু থানায় নিয়ে আসার পর এক বড় নেতার তদবিরের মুখে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে থানার একটি গোপন কক্ষে লুকিয়ে রাখা হয়। তাই পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করছেন ওসি।
মাদকের আস্তানা মামা-ভাগিনার দোকানের আশপাশের কয়েকজন ব্যবসায়ীও জানালেন একই কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা চকরিয়া নিউজকে বলেন, শনিবার বিকেল ঠিক চারটার আগেই থানার এসআই আশিকুর রহমান ও বিপুল রায়সহ একদল পুলিশ ঝটিকা অভিযানে আসেন এখানে। এ সময় বেশকিছু মাদকসেবী পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলেও সেখান থেকে আটক করা হয় ছাত্রলীগ নেতা এহতেশামকে।
চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘পেকুয়া থানার ওসি তো এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানাননি। আমি খবর নিয়ে দেখছি আসল ঘটনা কী।’
জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এহতেশাহমুল হক শনিবার সন্ধ্যায় চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্রকারীরা পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এসব মিথ্যা তথ্যের ওপর ভর করে পুলিশও অভিযান চালায়। পুলিশ আমাকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় পরে সসম্মানে আমাকে ছেড়ে দেয়।’
ইয়াবা জব্দের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ডাহা মিথ্যা। আমার কাছে এমন কিছু পেলে পুলিশ তো আমাকে ছেড়ে দিত না!’
পাঠকের মতামত: